,

বানিয়াচংয়ে আতর্কিত হামলায় হিলাল নগরে দোকান পাট বন্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বানিয়াচংয়ে ভূমিহীনদের জলাশয় দখলে হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম হিলাল নগরে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে লুটপাট ও কুপিয়ে ৬ জনকে গুরুতর আহত করেছে পাশর্^বর্তী মুরাদপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন ও তার লোকজন। আহতদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, হিলাল নগর গ্রামের মতিলাল দাসের পুত্র মনু দাস (৫২) ও বিজয় দাস (৪০), মৃত ধীরেন্দ্র দাসের পুত্র সুরন দাস (৪২), নগরবাসী দাসের পুত্র হেলো রঞ্জন দাস (৩৬), মৃত রমন চন্দ্র দাসের পুত্র ভানু রঞ্জন দাস (৪৫), মৃত হনোরাম দাসের পুত্র কৃষ্ণ লাল দাস (৪২)। এ সময় কাদিরগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শোক সভা চলছিল। তখন উপস্থিত ছিলেন হিলাল নগর গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ। অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধি মাঈনুদ্দিন মেম্বারের পক্ষ থেকে ঘটনার পর হিলাল নগর গ্রামের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে শোক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে হিলাল নগর গ্রামের ৭ জনকে পুলিশের আটক করে। পরে জলাশয়ের প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মাছ, ১ লক্ষাধিক টাকার মাছের খাবার ও অর্ধলক্ষ টাকার একটি নৌকা লুট করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ আগস্ট। পুনরায় হামলার আশংকা ও গ্রেফতার আতংকে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে হিলাল নগর গ্রাম। এদিকে মাঈনুদ্দিন মেম্বার ও তার লোকজনের ভয়ে কাদিরগঞ্জ বাজারে ২০/২৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রেখেছেন হিলালনগর গ্রামের ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আমীর হুসেন মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান ঘটনাটি আপসে মিমাংসার প্রস্তাব দেয়ায় পাল্টা মামলাও করতে পারছেননা নির্যাতিত হিলাল নগর গ্রামবাসী। গত শুক্রবার সরেজমিন প্রত্যন্ত হিলাল নগর গ্রাম ও কাদিরগঞ্জ বাজার পরিদর্শনকালে বাজারবাসীসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ফেলে যাওয়া সরকারী খাস জলাশয় বন্দোবস্ত নিয়ে মাছ চাষ করে এর মুনাফা দিয়ে প্রতিবছর হিলাল নগর গ্রামবাসীর ঐহিত্যবাহী বড় ধর্মীয় উৎসব কালীপুজার ব্যয় নির্বাহ করা হয়। সম্প্রতি ওই জলাশয়টির প্রতি লুলোপ দৃষ্টি পড়ে মাঈনুদ্দিন মেম্বারসহ কতিপয় লোকজন। হিলাল নগর গ্রামবাসীর মধ্যে কয়েকজন মুঠোফোনে জানান, ভূমিখেকোদের অত্যাচারে দেশ ছেড়ে যাবার উপক্রম হয়েছে আমাদের। এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, আমি প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর ও ফেরদৌস মেম্বারের কাছ থেকে জেনেছি হিলাল নগর গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে মুরাদপুর গ্রামে হামলা চালানোর জন্য এগিয়ে আসার খবর পেয়ে জাহাঙ্গীর মেম্বার ও স্থানীয় নৌ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মণিসাধ্য হিলাল নগর গ্রামের নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কামারকে উত্তেজিতদের শান্ত খাতার অনুরোধ করেন। এরপর হিলাল নগরবাসী মুরাদপুরে হামলা চালালে শালিসানসহ ৮ জন আহত হয়। এ ব্যাপারে ওসি বলেন, হিলাল নগরবাসীর কেউ আহত হলে তারা অভিযোগ করলে আমি মামলা নেব।


     এই বিভাগের আরো খবর